January 17, 2025, 3:53 am

সংবাদ শিরোনাম
শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ টেকনাফ ২ বিজিবি”র অভিযানে আটক-৬ লক্ষ্মীপুরে তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন সিএনজি চালকরা মধুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেনাপোলে বিজিপি বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে দিশেহারা সন্তানরা ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ

প্রধানমন্ত্রীর চেহারায় ‘দুশ্চিন্তার ছাপ’ দেখছেন রিজভী

প্রধানমন্ত্রীর চেহারায় ‘দুশ্চিন্তার ছাপ’ দেখছেন রিজভী

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দুদিন আগের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর চেহারায় ‘দুশ্চিন্তার ছাপ’ দেখেছেন তিনি। আর তাতে তার মনে হয়েছে, সরকারের ‘পতনের সময়’ হয়ে এসেছে। সরকার যদি ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের গণদাবি’ উপেক্ষা করে, তাহলে বিএনপির ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন’ তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন রিজভী। গতকাল মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারের পতনের মহালগ্ন উপস্থিত হয়েছে। আর কোনো উপায় নেই তাদেরকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। পরশুদিন প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে দাপট থাকলেও তার চেহারায় ছিল অন্যমনস্কতা ও দুশ্চিন্তার ছাপ। গত রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কোনো উদ্যোগ তারা নেবেন না। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়েও সরকারের করার কিছু নেই।

বিএনপি না এলেও নির্বাচন করে ফেলার পক্ষপাতি শেখ হাসিনা এটাও বলেন, নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারও নেই। দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দল বিএনপি একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আসছিল। সেই সঙ্গে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতি মামলার সাজায় কারাগারে যাওয়ার পর তার মুক্তির শর্তও জুড়ে দিয়েছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার বলেন, আমাদের সামনে এখন পথ জনগণ। জনগণই এর উত্তর দেবে। ‘কাদেরের বক্তব্যে অশুভ চক্রান্ত’ ভোটে বিএনপির জয় হিন্দুদের জন্য বিপদের হবে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যকে  ‘সাম্প্রদায়িক বিভাজনের অশুভ চক্রান্ত’ আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি নেতা রিজভী।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন জাতীয় ঐক্যের নামে সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত হচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। আকস্মিকভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের চক্রান্ত অশুভ চক্রান্তের ইঙ্গিতবাহী। আবহমান বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছেন ওবায়দুল কাদের সাহেবরা। গত রোববার ঢাকায় জন্মাষ্টমীর এক শোভাযাত্রা উদ্বোধনের সময় ক্ষমতাসীন দলের নেতা কাদের ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির জয়ের পর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে আগামি নির্বাচন নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এবার যদি সেই অপশক্তি আবার ক্ষমতায় আসতে পারে, ২০০১ সালের চেয়েও ভয়াবহ রক্তাক্ত সময় আপনাদের জন্য ঘনিয়ে আসবে।

 

কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনায়

রিজভী বলেন, “জনসমাজে সাম্প্রদায়িক ঐক্য যখন অটুট বন্ধনে গ্রন্থিত, তখন তিনি আচমকা সাম্প্রদায়িকতা টেনে এনে দেশের মানুষকে পরিকল্পিতভাবে বিভাজনের দিকে ঠেলে দেয়ার চক্রান্ত করছেন।ৃ জনবিচ্ছিন্ন সরকার এরকম ধর্মীয় উসকানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে বলে আমরা মনে করি। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে ‘প্রথম দিনেই এক লাখ লোককে হত্যা’ করা হবে বলে যে মন্তব্য আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ করেছেন, তারও সমালোচনা করেন রিজভী।

তিনি বলেন, “এই কাল্পনিক তথ্য তিনি কোন পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে সংগ্রহ করেছেন জনগণ তা জানতে চায়। এই তথ্য কি হাসানুল হক ইনু না সজীব ওয়াজেদ জয়ের? কারণ তারা মাঝে মাঝে উদ্ভট তথ্য দিয়ে থাকেন। বিএনপি তো অনেকবার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু কোথাও তো রক্তক্ষরণের কোনো দৃষ্টান্ত নেই। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল তার নির্বাচনী এলাকা ভোলায় ‘কোনো অপকর্মের’ কারণে ওই আশঙ্কা করছেন কি না- সেই প্রশ্নও রাখেন রিজভী।

তিনি বলেন, আপনার এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা ঘরবাড়ি ছেড়ে দোকানপাট, গরু-ছাগল বিক্রি করে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে মানবেতর জীবন যাপন করছে। নিজেদের এই অপকর্মের প্রতিশোধ হতে পারে এই আশঙ্কায় কী তোফায়েল আহমেদ সাহেবরা মানুষ হত্যার কাল্পনিক তথ্য দিচ্ছেন। আসলে ভবিষ্যতে ব্যাপক হত্যার ভীতি ছড়িয়ে জনসমাজে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি করছেন তারা।

 

‘ধড়পাকড়’

গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে পুলিশ সারাদেশে ব্যাপক ধড়পাকড় করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন রিজভী।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে মাত্র ২/৩ দিনে চারশতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার আসামির সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যাবে। অথচ এখন কোনো কর্মসূচি নাই। ‘পতনের আতঙ্ক’ থেকেই সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর এই ‘দমনপীড়ন’ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

তিনি বলেন, আমি সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি এবং যে সমস্ত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, তা প্রত্যাহারের দাবি করছি। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া জুয়েল, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এম এ মালেক, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, মনির হোসেন ও হেলাল খান উপস্থিত ছিলেন।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর